হজ না করেও হজের সওয়াব

ইসলামের পঞ্চম রকন হলো হজ। হজ সবার ওপর মহান আল্লাহ তায়ালা ফরজ করেননি, যাদের হজে যাওয়ার অর্থ রয়েছে, শুধু তাদের ওপরই হজ ফরজ করা হয়েছে। তাদের ভাগ্যে জুটে যায় পবিত্র হজ। ছুটে যান স্বপ্নের মক্কা আর মদিনায়। তবে যাদের হজ্জে অথবা ওমরায় যাওয়ার সামর্থ্য ও সক্ষমত নেই, তাদের জন্যও দয়াবান আল্লাহ এমন কিছু পথ বের করে দিয়েছেন, যেগুলো দ্বারা দুর্বল বান্দারা মকবুল হজ্জের অথবা ওমরাহর সওয়াব পেয়ে যেতে পারে। হযরত মুহাম্মাদ সা. আমাদের সেসব আমল বাতলিয়ে দিয়েছেন বিভিন্ন হাদিসে।

১. জামাতের সহিত নামাজ আদায়
আবু উমামা রা. বর্ণনা করেন, নবীজি সা. ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে ফরজ নামাজ আদায় করল সে যেন হজ্জ করে আসল। আর যে ব্যক্তি নফল নামাজ আদায় করতে মসজিদে গমন করল সে যেন ওমরাহ করে আসল। (তাবারানি: ৭৫৭৮)

২.সালাতুল ইশরাক আদায় করা
ফজরের নামাজ আদায়ের পর মসজিদে সূর্যোদয় পর্যন্ত অবস্থান করা। আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, নবীজি সা. বলেন, যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করল, তারপর সূর্যোদয় পর্যন্ত মসজিদে বসে আল্লাহর জিকির করল, এরপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করল, সে ব্যক্তি হজ্জ ও ওমরাহর সওয়াব নিয়ে ফিরল। (তিরমিজি: ৫৮৬)

৩.দীন শিক্ষা বা শিখানোর উদ্দেশ্যে মসজিদে যাওয়া
আবু উমামা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল স. বলেন, যে ব্যক্তি মসজিদে গেল কোনো ভালো কথা শিখা বা শিখানোর উদ্দেশ্যে, সে পরিপূর্ণরূপে হজ্জ আদায়কারী একজন ব্যক্তির ন্যায় সওয়াব লাভ করবে। (তাবারানি: ৭৪৭৩)

৪.রমজানে ওমরাহ পালন করা
সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “রমজানে ওমরাহ আদায় করলে আমার সঙ্গে হজ্জ আদায়ের সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করবে।” (সহিহ বোখারি: ১৭৮২, সহিহ মুসলিম: ২২২)

৫. মসজিদে কুবায় নামাজ আদায়
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি নিজ ঘরে পবিত্রতা অর্জন করল, তারপর মসজিদে কুবায় এসে কোনো নামাজ আদায় করল, সে ওমরাহর সওয়াব হাসিল করল।” (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৪১২) হাদিস বিশারদগণ বলেন, হাদিসটি সহিহ।

৬.পিতা-মাতার সেবা এবং তাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা
হজরত আনাস ইবনে মালিক রা. বর্ণনা করেন, জনৈক ব্যক্তি নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বলল, আমি জিহাদে অংশগ্রহণ করতে চাই, কিন্তু আমার সেই সামর্থ্য ও সক্ষমতা নেই। নবীজি প্রশ্ন করলেন, তোমার মাতা-পিতার কেউ কি জীবিত আছেন?

লোকটি বলল, আমার মা জীবিত। প্রত্যুত্তরে নবীজি বললেন, তাহলে মায়ের সেবা করে আল্লাহর নিকট জিহাদে যেতে না পারার অপারগতা বা ওজর পেশ কর। এভাবে যদি করতে পার এবং তোমার মা সন্তুষ্ট থাকেন তবে তুমি হজ্জ, ওমরাহ এবং জিহাদের সওয়াব পেয়ে যাবে। সুতরাং আল্লাহকে ভয় কর এবং মায়ের সেবা কর।” (মাজমাউয যাওয়াইদ: ১৩৩৯৯) হায়সামি (রহ.) বলেন, হাদিসটি সহিহ।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment